বিএনপির ৭ ধারা বাদ দিয়ে জমা দেওয়া গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে গ্রহণযোগ্য না হওয়ার খবর অনানুষ্ঠানিক ভাবেই জানতে পেরেছে দলটির শীর্ষ নেতারা। নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসলে গঠনতন্ত্র গ্রহণযোগ্য করতে ৭ ধারা বলবৎ রাখতে হবে বিএনপিকে। আর তখন দুর্নীতির দায়ে কারান্তরীণ খালেদা জিয়া ও লন্ডনে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দলের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না। তাই এরই মধ্যে বিএনপির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, কে হবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান? ইতিমধ্যেই কয়েকটি আলোচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি জেল থেকে আসা কারান্তরীণ বেগম জিয়ার এক নির্দেশে জানা গেছে এদের কারও ভাগ্যের শিকেই ছিঁড়ছে না।
কারাগারের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা সত্ত্বেও বেগম জিয়া কারাগার থেকে কোনো মাধ্যমে দলের নেতাদের নির্দেশ পাঠান বলে এর আগেও শোনা গেছে। স্বজনদের কাছেও নির্দেশ পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। এমনই এক নির্দেশ সম্প্রতি বিএনপির নেতৃবৃন্দ পেয়েছেন। বেগম জিয়ার নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোনোভাবেই জিয়া পরিবারের বাইরে কেউ হবে না বলে জানানো হয়েছে।
বেগম জিয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য তিনজনের নামও উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে। নামের তালিকায় শুরুতেই আছেন বেগম জিয়ার বেড় পুত্রবধূ ও তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমান। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বেগম জিয়ার ছোট পুত্রবধূ এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। আর তৃতীয় নামটি হলো বেগম জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার।
আজ বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গেলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। এই আলোচনাতেও পূর্বের তালিকা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিষয়টি করতে বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এদিকে বিএনপি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে অদ্ভুত তথ্য, বেগম জিয়ার পরিবারের যে তিনজনের নাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বলা হয়েছে এদের কেউই বিএনপির প্রাথমিক সদস্যও নয়। তাহলে বিএনপির চেয়ারম্যান এমন কেউ হবে যে দলটির সদস্যও নয়? তবে আরও অদ্ভুত তথ্য হলো, বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এদের মধ্যে যেকেউ দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনে নির্বাচন, যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা নমিনেশন বাণিজ্য হবে। এমন সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মতো লাভজনক পদ কোনোভাবেই পরিবারের বাইরে যেন না যায় তাই নিশ্চিত করছেন বেগম জিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপিতে যদি বেগম জিয়ার পরিবারের নেতৃত্বেই থাকে তাহলে একটি বিষয় আবার প্রমাণ হবে। প্রমাণ হবে, বিএনপি একটি পারিবারিক সম্পত্তি ও লাভজনক ব্যবসা।